তোমাদের এই নগরে – হুমায়ূন আহমেদ

তোমাদের এই নগরে – হুমায়ূন আহমেদ

তোমাদের এই নগরে – হুমায়ূন আহমেদ

বইয়ের নামঃ তোমাদের এই নগরে (২০০০)
লেখকঃ হুমায়ুন আহমেদ
সাইজঃ ৫ এমবি
ফরম্যাটঃ পিডিএফ

মিথ্যা (হিমুর বাবার উপদেশ) – তোমাদের এই নগরে

হে আমার প্রিয় পুত্র, মিথ্যার কিছু কিছু উপকার আছে। কিছু মিথ্যা সমাজের এবং ব্যক্তিজীবনের ক্ষেত্রে কল্যাণকর ভূমিকা নেয়। কিন্তু মিথ্যা মিথ্যাই। সত্য আলো, মিথ্যা অন্ধকার। তোমার যাত্রা আলোর দিকে। মিথ্যা ছলনাময়ী, নানান ছলনায় তোমাকে ভুলাইবে। তুমি ভুলিও না। কখনো না, কোন অবস্থাতেই না। ইহা আমার আদেশ।

ফ্ল্যাপে লিখা কথা
আমি বসে আছি নৌকার গলুইয়ে। পা ঝুলিয়ে বসেছি। নৌকা খুব দুলছে বলেই মাঝে মাঝে নদীর পানিতে পা ডুবে যাচ্ছে। শরীর সিরসির করছে। গায়ে কাঁপন লাগছে। নদীর পানি এত ঠান্ডা হবার কথা না-। এই নদীর পানি এত ঠান্ডা কেন? মনে হচ্ছে বরফ গলা পানি। ঘটনাটি কী? স্বপ্নের নদী না তো?

বুক রিভিউ

আশা বললো- আমার অনেক দিন থেকেই ক্ষীণ সন্দেহ হচ্ছিল–আজ আমিও নিশ্চিত হয়েছি যে আমি পাগলের মতো আপনার প্রেমে পড়ে গেছি। কীভাবে নিশ্চিত হলাম জানেন? আপনাকে দেখার পর থেকে আমার কান্না পাচ্ছে। Strange type কান্না। মনে হচ্ছে সারা শরীরে কান্নাটা ছড়িয়ে আছে। ব্যথার মতো অনুভূতি। ব্যথাটা দলা পাকিয়ে ঢেউ এর মতো গলা পর্যন্ত ওঠে আসছে। সরি অনুভূতিটা আপনাকে বুঝাতে পারছি না।…
অথচ আশার মোটেই অমোন হবার কথা ছিলো না। জীবনে কিছু কিছু সময় না আসলে, কারো সংগে দেখা না হলেই কি তবে ভালো হয়? সেই সব অদ্ভুত সময় চেতনাকে গাঢ় ভাবে আছন্ন করে রাখে। বাস্তব বড্ড ফিকে মনে হয়, খুব আপন করে পেতে ইচ্ছে করে কল্পনাগুলো…. যেই কল্পনা কখনোই আমাদের ছিলো না। তখন অগোচরে ভেসে যাওয়া ছাড়া আর কি ই বা করার থাকে !? এই গল্পটা কি তবে আশার ভেসে যাওয়ার????
ম্যানেজার টেলিফোনে রূপাকে ধরে দিল। রূপা শান্ত গলায় বলল, এত দিন পর হঠাৎ কী ব্যাপার?
কোন ব্যাপার না। গলার স্বর শোনার জন্যে টেলিফোন করলাম।
গলার স্বর তো শোনা হয়েছে। এখন কি টেলিফোন রেখে দেব?
না আরো কিছুক্ষণ শুনি।
কতক্ষণ?
মিনিমাম তিন মিনিট।
তিন মিনিট কেন?
গান তিন মিনিটের মতো হয়। সেই জন্যেই তিন মিনিট।….
আমি জানি না তখন রূপার কি সত্যিই রাগ লেগেছিলো কিনা। ভালোবেসে ব্যাথা দিলেও তা নাকি প্রাপ্তির খাতায় যোগ হয়! তবে আমার কেনো যেনো খুব মনে হচ্ছিলো রূপার জন্যেই কি কবি লিখেছিলেন-
যদি ভুলে যাবার হয়, ভুলে যাও।
দূরে বসে বসে মোবাইলে, ইমেইলে হঠাৎ হঠাৎ জ্বালিয়ো না,
দূরে বসে বসে নীরবতার বরফ ছুড়ে ছুড়ে এভাবে বিরক্তও করো না।
ভুলে গেলে এইটুকু অন্তত বুঝবো ভুলে গেছো,…
গল্পটা কি তবে জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাবার???
নকল দৃশ্য। বানানো, মিথ্যা। কিন্তু দেখে সেরকম মনে হচ্ছে না। আশা গভীর মমতায় জয়নাল সাহেবের বুকে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে। তার চোখ ছলছল করছে। যে কোনো মুহূর্তে চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়বে। মন বড় টলমল করছে।
জয়নাল সাহেব বিড়বিড় কথা বলছেন; যে গাঢ় মমতা নিয়ে তিনি কথা বলছেন-— এত মমতায় এর আগে কি কোনো পিতা তাঁর কন্যার সঙ্গে কথা বলেছে?….
অথচ তার জানা পুরো দৃশ্যটাই মিথ্যা! এই গল্পটা কি তবে মিথ্যের!! একগুচ্ছ সুখময় মিথ্যে বুকে চেপেই কি আমরা কাটিয়ে দিচ্ছি সারাটা জীবন!!!
পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ আমি কখনোই হিমু হতে চাইনি, অথচ কি আশ্চর্য! আমি বরাবরই রূপার প্রেমে পড়ি!! সব সময় এই মেয়েটার জন্য এক ভালোবাসা মিশ্রিত মায়া অনুভূত হয়! কি নিদারুণ ভালোবেসেই না মেয়েটা ব্ল্যাকহোলে জ্বালিয়ে যাচ্ছে প্রেমের প্রদীপ!!
আমি আশার ভালবাসার প্রেমে পড়ে গেছি। সম্পূর্ণ পরাজিত হয়েই তো মানুষ সত্যিকারের ভালোবাসে, তবুও কেনো ভুল সময়ে এই হেরে হেরে যাওয়া???
স্যার, আপনাকে বলছি- এমন সুন্দরতম দৃশ্যগুলোর সৃষ্টি কেনো করেছেন! জাপানী প্রবাদ নাকি বলে, “একটা আন্তরিক কথায় নাকি তিনটা শীতকাল উষ্ণ করা যায়” তাই বলে একজীবনের বৃষ্টি দিয়ে কেনো কেনো আমাদের সারা জীবন ভিজিয়ে দিয়ে গেলেন!!!?
বইটা শেষ করে আমি বরানরই আছন্ন হয়ে যাই। পরবাসী সুন্দরী, তোমার কথা মনে পড়ে। ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামে। দূরে গান বেজে উঠে-
এসো নীপবনে ছায়াবীথি তলে,
এসো করো স্নান নবধারা জলে।।

ডাউনলোড করুন

Similar titles

সার্বজনীন – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
করুণাধারায় এসো – প্রফুল্ল রায়
বিবর – সমরেশ বসু
পাক সার জমিন সাদ বাদ – হুমায়ুন আজাদ
মিস্‌মিদের কবচ – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
আরোগ্য – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
দুনিয়ার ঘনাদা – প্রেমেন্দ্র মিত্র
পরিস্থান – ইমদাদুল হক মিলন
কার্ভালোর বাক্স – সমরেশ মজুমদার
কথা কল্পনা কাহিনী – গজেন্দ্রকুমার মিত্র
অমৃত দ্বীপ – হেমেন্দ্রকুমার রায়
ভয়ংকর ভুতুড়ে – হুমায়ূন আহমেদ

Leave a comment

Name *
Add a display name
Email *
Your email address will not be published
Website