হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম – হুমায়ূন আহমেদ
হিমু হতে চেয়েছিল, এমন মানুষের সংখ্যা কিন্তু একেবারে কম না। হুমায়ূন আহমেদের অদ্ভুত, জাদুকরী চরিত্রকে চিনেছেন কিন্তু তার ভক্ত হননি কিংবা জীবনে কখনও হিমু হতে চাননি, এমন মানুষ হয়ত খুঁজেই পাওয়া যাবে না।
হুমায়ূন আহমেদের অন্যতম সেরা সৃষ্টি ‘হিমু’। ১৯৯০ সালে প্রথম প্রকাশের পর থেকেই বাঙালি পাঠকের প্রিয় চরিত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সে। এলোমেলো, অগোছালো জীবন, বৈষয়িক বিষয়ের প্রতি উদাসীনতা আর রহস্যময়তা; সব মিলে বাংলা সাহিত্যের এক বর্ণাঢ্য চরিত্র হিমু। হিমু সিরিজের মোট বই সংখ্যা ১৯ টি। তার মাঝে ৬ নাম্বার বইটির নাম ‘হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম’। আজ কথা হবে এই বইটি নিয়ে।
গল্পের শুরুটা সুন্দর এক দিনের বর্ণনা দিয়ে। সেখানে স্বভাবসুলভ পাগলামিতে মেতে আছে হিমু। হঠাৎ দেখা মারিয়া নামের এক মেয়ের সাথে। হুমায়ূন আহমেদের নায়িকাদের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী মারিয়া [[[ ও ]]] দুর্দান্ত সুন্দরী। এই মারিয়া পাঁচ বছর আগে সাংকেতিক ভাষায় এক প্রেমপত্র দিয়েছিল হিমুকে। হিমুর ফুপাতো ভাই বাদল এই প্রেমপত্রের অর্থ উদ্ধার করেছিল, কিন্তু হিমু সেটা শুনতে চায় নি।
হিমু ও মারিয়ার কথা এবং হিমুর স্মৃতি রোমন্থন থেকে জানা যায় মারিয়ার বাবা আসাদুল্লাহ সাহেব সম্পর্কে। সুপুরুষ এই মানুষটি ভীষণ রকম বইপাগল। বইয়ের এক দোকানেই তার পরিচয় হয় হিমুর সাথে। সেই সূত্রেই হিমু-মারিয়ার পরিচয়। আসাদুল্লাহ সাহেবের অদ্ভুত এক তত্ত্ব আছে; প্রতিটা মানুষের কাছেই ৫ টি করে অদৃশ্য নীলপদ্ম থাকে। কেউ কাউকে ভালবাসলে সেই নীলপদ্ম তাকে দিয়ে দেয়। কেউ যদি তার কাছে থাকা ৫ টি নীলপদ্মই প্রিয় মানুষটিকে দিয়ে দেয়, তাহলে সে আর জীবনে অন্য কাউকে ভালবাসতে পারে না। এই তত্ত্ব আসাদুল্লাহ সাহেব আশেপাশের সবাইকে শুনিয়ে বেড়ান। কেউ বিশ্বাস করেন, কেউ করেন না। হিমু কি বিশ্বাস করে এই তত্ত্বে?
হুমায়ূন আহমেদ পৃথিবী ছেড়েছেন তিন বছর হল, তবু বাঙালি পাঠকের কাছে তিনি আজও সবচেয়ে প্রিয় লেখকদের একজন। তিনি বেঁচে আছেন তার সৃষ্ট চরিত্রগুলোর মাঝেই। আর হিমুর মত এক বর্ণিল চরিত্র, যার জীবনের মূল লক্ষ্য মহাপুরুষ হওয়া, তার গল্পগুলো মানুষকে মুগ্ধ করেছে, স্বপ্ন দেখিয়েছে বাউন্ডুলে জীবনের। তাই হিমুকে বাঙালি পাঠক মনে রাখবেন সবসময়!
জীবনে যে শব্দটি সবচেয়ে বেশি শোনে তা হচ্ছে তার নিজের নাম।
যতবারই শোনে ততবারই তার ভালো লাগে। পৃথিবীর মধুরতম শব্দ
হচ্ছেনিজের নাম। পৃথিবীর দ্বিতীয় মধুরতম শব্দ খুব সম্ভব
‘ভালোবাসি’।– হুমায়ূন আহমেদ
‘যাবার আগে আপনি বলে যাবেন আপনি কে?
আমি বললাম,‘মারিয়া আমি কেউ না। I am Nobody.”
আমি আমার এক জীবনে অনেককে এই কথা বলেছি-কখনো আমার গরা ধরে যায়নি, বা চোখ ভিজে ওঠেনি। দু’টো ব্যাপারই এই প্রখম ঘটল।
First নীল পদ্ম ….
‘হিমুর হাতে কয়েকটি নীল পদ্ম’– বস্তুত এটি সেই উপন্যাস যেটি পড়ে আমার উপন্যাসের প্রতি আগ্রহ জন্মে ।
নন্দিত কথা সাহিত্যিক পরম শ্রদ্ধেয় হুমায়ন আহমেদের লেখা এ উপন্যাসটি আমার সবচেয়ে প্রিয়।
মূলত হুমায়ন আহমেদ এমন একজন মানুষ যিনি তাঁর প্রতিটি কর্মে সুনিপুণ দক্ষতা ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করেছেন, যার অন্যতম নমুনা হল হিমু।
তিনি হিমুর মাধ্যমে দেখিয়েছেন কিভাবে সমাজের বাধা-বিপত্তি, সীমাবদ্ধতা, মায়া মমতার ঊর্ধ্বে উঠে নিজের জীবন কিভাবে গঠন করা যায়,কিভাবে ভিন্ন মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা যায়।
আর সবচেয়ে বর কথা হল যে তিনি হিমুর মাধ্যমে আমাদেরকে জ্যোৎস্নাকে নতুনভাবে চিনতে শিখিয়েছেন।
আর তাই হিমু কে নিয়ে লেখা তাঁর প্রতিটি বই আমার অত্যন্ত প্রিয়।
কিন্তু সবচেয়ে বেশি প্রিয় ‘হিমুর হাতে নীল পদ্ম’ বইটি কারণ এর মাঝে হিমুর সবকিছু একীভূত হয়েছে ।।
পৃষ্ঠাঃ ১০৭
সাইজঃ ৩.৮৬ মেগাবাইট
হাই কোয়ালিটি
রেজুলেশনঃ ৬০০ ডিপিআই