এবং হিমু – হুমায়ূন আহমেদ
বইয়ের নামঃ এবং হিমু
লেখকের নামঃ হুমায়ূন আহমেদ
বইয়ের সাইজঃ ৫.২ মেগাবাইট
বইয়ের ধরনঃ বাংলা উপন্যাস
ফাইল ফরম্যাটঃ পিডিএফ
হিমু হচ্ছে বাংলাদেশী কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ সৃষ্ট একটি জনপ্রিয় ও কাল্পনিক চরিত্র। হিমু একজন বেকার যুবক যার আচরণ কিছুটা অস্বাভাবিক।নব্বইশের দশকে হিমুর প্রথম উপন্যাস ময়ূরাক্ষী প্রকাশিত হয়। প্রাথমিক সাফল্যের পর হিমু চরিত্র বিচ্ছিন্নভাবে হুমায়ুন আহমেদের বিভিন্ন উপন্যাসে প্রকাশিত হতে থাকে। হিমু ও মিসির আলি হুমায়ুন আহমেদ সৃষ্ট সর্বাধিক জনপ্রিয় দুইটি কাল্পনিক চরিত্র। হিমু চরিত্রের আসল নাম হিমালয়। এ নামটি রেখেছিলেন তার বাবা। লেখক হিমুর বাবাকে বর্ণনা করেছেন একজন বিকারগ্রস্ত মানুষ হিসেবে; যার বিশ্বাস ছিল ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার যদি প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করা যায় তবে একইভাবে মহাপুরুষও তৈরি করা সম্ভব। তার মহাপুরুষ তৈরির বিদ্যালয় ছিল যার একমাত্র ছাত্র ছিল তার সন্তান হিমু। হিমুর পোশাক হল পকেটবিহীন হলুদ পাঞ্জাবী। ঢাকা শহরের পথে-পথে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ানো তার কর্মকাণ্ডের মধ্যে অন্যতম। উপন্যাসে প্রায়ই তার মধ্যে আধ্যাত্মিক ক্ষমতার প্রকাশ দেখা যায়। যদিও হিমু নিজে তার কোন আধ্যাত্মিক ক্ষমতার কথা স্বীকার করে না। হিমুর আচার-আচরণ বিভ্রান্তিকর। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তার প্রতিক্রিয়া অন্যদেরকে বিভ্রান্ত করে, এবং এই বিভ্রান্ত সৃষ্টি করা হিমুর অত্যন্ত প্রিয় একটি কাজ। হিমু উপন্যাসে সাধারণত হিমুর কিছু ভক্তশ্রেণীর মানুষ থাকে যারা হিমুকে মহাপুরুষ মনে করে। এদের মধ্যে হিমুর খালাতো ভাই বাদল অন্যতম। মেস ম্যানেজার বা হোটেল মালিক- এরকম আরও কিছু ভক্ত চরিত্র প্রায় সব উপন্যাসেই দেখা যায়। এছাড়াও কিছু বইয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাস সৃষ্টিকারী ও খুনি ব্যক্তিদের সাথেও তার সু-সম্পর্ক ঘটতে দেখা যায়। হিমুর একজন বান্ধবী রয়েছে, যার নাম রূপা; যাকে ঘিরে হিমুর প্রায় উপন্যাসে রহস্য আবর্তিত হয়। নিরপরাধী হওয়া সত্ত্বেও সন্দেহ�
হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টিকর্মগুলোর মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে কঠিন মনে হয় হিমু সিরিজের বইগুলোর রিভিউ লেখা। সে হিসেবে আমার জন্য এটি একটি কঠিন কাজ বটে। তবে যেহেতু এটি একটি প্রিয় বই তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি রিভিউ লেখার জন্য!
হিমুকে কয়েকদিন ধরে গরু খোঁজার মতো খোঁজা হচ্ছে। না তা গরু খুজেঁ দেওয়ার জন্য না। সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু বাদল! কিভাবে যেন মাছ খেতে গিয়ে গলায় কাঁটা বেঁধিয়ে বসে আছে। কয়েকদিন ধরে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ! এমনকি ঢোক পর্যন্ত গিলতে পারছে না। অনেক ডাক্তার দেখানো হয়েছে। কেউ কিছু করতে পারেনি। কিন্তু বাদলের বিশ্বাস এই কাজ হিমু ভাই ছাড়া আর কেউ করতে পারবে না। সেজন্যই হিমুকে গরু খোঁজা খোঁজা হচ্ছে…
এক রাতে হাঁটতে হাঁটতে খিদে লাগায় হিমু হাজির হয় মাজেদা খালার বাসায়! সে রাতে খাবার সময় নেমে যায় বাদলের গলার কাঁটা। হিমু হয়ে যায় খালা খালুর প্রিয়পাত্র। সবাই মনে করে আধ্মাত্বিক ক্ষমতার দ্বারা হিমু বাদলের কাঁটা নামিয়ে দিয়েছে। শুধু একজন বাদে… সে হচ্ছে ইরা!
ইরা! বাদলদের দূরসম্পর্কের আত্মীয়। সামনে পরীক্ষা তাই বিশেষ একটা কারণে তাকে এখানে থেকে পড়াশোনা করতে ইচ্ছে। ইরা কখনোই হিমুকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেনি! তার মনে হতে থাকে এসব বুজরকি শুধুমাত্র মানুষকে ঠকানোর জন্য। বাদলের কাঁটা নামিয়ে চলে আসার পর ইরার সাথে হিমুর কয়েকবার দেখা হয়! বাদলের সন্ন্যাসব্রত যেন তাদের দেখা করার উপায় ছিলো মাত্র!
এ গল্পে হিমু, ইরা, বাদল, মাজেদা খালা, খালু বাদেও আরো কয়েকটি চরিত্র রয়েছে। এরমধ্যে প্রধান দুটি চরিত্র হলো, রেশমা খালা আর বদরুল সাহেব।
বদরুল সাহেব এই গল্পের অন্যতম প্রধান চরিত্র। অত্যন্ত দুঃখী অথচ গোবেচারা ধরনের মানুষ নিতান্তই খেয়ালবশত হিমুকে প্রচন্ড পছন্দ করেন…
এছাড়া রয়েছেন রেশমা খালা! স্বামীর মৃত্যুর পর যিনি রাতে ঘুমের সময় স্বামীকে প্রতিরাতে বাসায় দেখতে পান এবং এই সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি হিমুকে তার কাছে নিয়ে আসেন! এ গল্পে রেশমা খালা না থাকলে নিঃসন্দেহে গল্পটি সাদামাটা রূপ ধারণ করতো।
এবং হিমু বইটি হিমু সিরিজের আমার পড়া অন্যতম সেরা এবং পছন্দনীয় বই। আমার এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার পড়া হয়েছে! এখনও মাঝে মাঝে পড়ি। বিশেষ করে শেষের দিকে ইরা আর হিমুর মধ্যকার কথোপকথন এক ধরনের অন্যরকম শিহরনের জন্ম দেয়। আর রূপা চরিত্রটি… যেন প্রতিটি গল্পেই নিজের মতো! পছন্দনীয় অথচ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য!